মিরু হাসান বাপ্পী, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: ২৩ জানুয়ারি ২০২২ খ্রিঃ বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাঁধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সকল পরীক্ষা স্থগিত করার প্রতিবাদে আয়োজিত কর্মসূচিতে এ ঘটনা ঘটে।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজ অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও তাদের কর্মসূচিতে বাঁধা প্রদান করে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এমনকি এসব ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয় এক পত্রিকার সংবাদকর্মীর সাথেও ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমানসহ সকল স্থগিত পরীক্ষা দ্রুত সম্পন্নের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে দাঁড়ান। এসময় কলেজ অধ্যক্ষ মানববন্ধন না করে আলোচনায় অংশগ্রহণের কথা জানান। তারপরেও কিছু শিক্ষার্থী তাদের কর্মসূচি চালিয়ে নেয়ার কথা বললে অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে তাদের ব্যানার কেড়ে নেয়া হয়। এরপরেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা ব্যানার ছিনিয়ে নেয়াসহ কর্মসূচিতে বাঁধা দেয়ার প্রতিবাদ জানান।
এসময় বক্তারা বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করতে এসেছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিয়ে আসছিল। ইতিমধ্যে অনার্স শেষ বর্ষের ছয়টি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। মাত্র তিনটি পরীক্ষা বাকি আছে। এরই মধ্যে চলমান পরীক্ষা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।’ শিক্ষার্থীদের দাবি দেশে এখন সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কার্যক্রম চলমান। শুধু পরীক্ষা স্থগিত কেন? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কেন?
তাদের স্বপ্ন দ্রুত পরীক্ষা শেষ করে কর্মস্থলে গিয়ে পরিবারের হাল ধরবেন। তাদের বক্তব্যের পরপরই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এসময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয় একটি পত্রিকার সংবাদকর্মীর সাথে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কর্মসূচিতে অংশ নেয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে নিয়তি সরকার নিতু বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু আমাদের অধ্যক্ষ স্যার মানববন্ধন করতে না দিয়ে কর্মসূচির ব্যানার কেড়ে নেন।
এমনকি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মসূচিতে বাঁধা প্রদান করে। সারাদেশে যদি সব কিছু চলতে পারে তাহলে আমরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে চাই।’ উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে মানববন্ধন কর্মসূচী করতে চেয়েছিল সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্ররোচনায় এবং অপশক্তি এখানে এসে একাত্মতা প্রকাশ করেছিল। যখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেখল তাদেরকে নিয়ে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে তখন তারা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাদের এ কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছে এবং তাদেরকে ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকার ব্যাপারে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শাহজাহান আলী জানান, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যেই কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে ক্যাম্পাসে জড়ো হয়েছিল। পরে তাদের ডেকে নিয়ে আন্দোলন না করে স্মারকলিপি দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। তিনি আরও জানান, ‘তাদের কর্মসূচিতে কোন প্রকার বাঁধা প্রদান এবং ব্যানার কেড়ে নেয়া হয়নি।
কলমকথা/বি সুলতানা
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।